খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি রেখেই বিদায়ী অর্থবছরের আর্থিক হিসাব চূড়ান্ত করেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ছাড়ের সুযোগে গত বছর ব্যাংকটি ১০৮ কোটি টাকা নিট মুনাফা দেখিয়েছে।
আর্থিক দুরবস্থার কারণে বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর প্রথম কয়েক বছর লভ্যাংশ না দিলেও পরবর্তী সময়ে প্রতিবছর শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিয়ে আসছিল ব্যাংকটি।
টানা সাত বছর এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকার সময় ব্যাংকটিতে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংক থেকে ৭৩ হাজার ১১৩ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, যা ব্যাংকটির মোট ঋণের প্রায় অর্ধেক। এর মধ্যে সরাসরি ঋণ ৫৬ হাজার ১১৮ কোটি, পরোক্ষ ঋণ ৭ হাজার ৫২৪ কোটি এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট ঋণ ৯ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা।
একক ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর মাধ্যমে ব্যাংক থেকে এভাবে বিপুল অর্থ লোপাটকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আর্থিক কেলেঙ্কারি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ছাড়ের ফলে গত বছর মুনাফা দেখাতে পারলেও বর্তমানে ইসলামী ব্যাংক দেশের খেলাপি ঋণের শীর্ষ ব্যাংকগুলোর একটি। আর্থিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ব্যাংকটি ২০১৯ সালে ৫৩২ কোটি, ২০২০ সালে ৪৫২ কোটি, ২০২১ সালে ৪৬৩ কোটি, ২০২২ সালে ৫৯২ কোটি এবং ২০২৩ সালে ৬১১ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল। তবে ২০২৪ সালে তা নেমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১০৮ কোটি টাকায়।