সুনামগঞ্জে ভারত থেকে অবৈধভাবে আনা ৯০টি গরু বদলে ফেলার ঘটনায় পাঁচজন জিম্মাদারসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার (৩১ আগস্ট) বিকেলে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম এ আদেশ দেন।
আদালতের আদেশ অনুযায়ী, সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তিন দিনের মধ্যে পাঁচ জিম্মাদার ও অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতকে অবহিত করতে হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এনামুল হক।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ এপ্রিল সুরমা নদীতে অভিযান চালিয়ে একটি স্টিলের নৌকাসহ ভারত থেকে আনা ৯০টি গরু জব্দ করে টাস্কফোর্স। অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান। এরপর বিজিবির নায়েব সুবেদার গিয়াস উদ্দিন সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে গরুগুলো সাময়িকভাবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দোয়ারাবাজার উপজেলার পাঁচজন স্থানীয় ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করা হয়।
জিম্মাদাররা হলেন—বোগলাবাজার ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, সহকারী শিক্ষক সবির আহম্মেদ, যুবদল নেতা হারুনার রশিদ, যুবলীগের সদস্য নাজমুল হাসান এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বাহার উদ্দিন।
তদন্তে দেখা যায়, জিম্মাদারেরা গরুগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণ করেননি। বরং বেশির ভাগ বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। নিলামে বিক্রির জন্য গত ২৬ আগস্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গরুগুলো উপস্থাপন করা হলে দেখা যায়, আসল ৯০টি গরুর মধ্যে মাত্র ১৪টি আগের মতো আছে, বাকি ৭৬টি বদলে ছোট আকারের বাছুরজাতীয় গরু আনা হয়েছে। জব্দের সময়ের ছবির সঙ্গেও কোনো মিল পাওয়া যায়নি।
এ পরিস্থিতিতে নিলাম কমিটির আহ্বায়ক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাং হেলাল উদ্দিন নিলাম স্থগিত করেন এবং বিষয়টি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠান। আদালত পর্যালোচনা শেষে বলেন, জিম্মাদারেরা রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ ও প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে দ্রুত মামলা দায়েরের নির্দেশ দেওয়া হলো।