ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের মধ্যে দায়িত্ব ভাগাভাগির টানাপোড়েনে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালের মর্গে বেওয়ারিশ লাশ জমে আছে। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে ২২টি এবং স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড হাসপাতাল) মর্গে ছয়টি লাশ পড়ে আছে।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতায় জুরাইন কবরস্থানে মাসে সর্বোচ্চ এক-তৃতীয়াংশ লাশ দাফনের অনুমতি রয়েছে। অন্যদিকে উত্তর সিটি করপোরেশন বলেছে, রায়েরবাজার কবরস্থানে শুধু উত্তর সিটির লাশই দাফন হবে, দক্ষিণের কোনো লাশ এখানে নেওয়া যাবে না। এ অবস্থায় আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম বারবার দুই সিটি করপোরেশনের কাছে চিঠি দিয়ে সমস্যার স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছে।
জুরাইন কবরস্থানের মোহরার আমিনুল ইসলাম জানান, কবরস্থানের সংস্কার শেষে জুলাই থেকে পুনরায় বেওয়ারিশ লাশ দাফন শুরু হয়েছে। প্রতি মাসে গড়ে ২০ থেকে ২২টি লাশ দাফন করা হচ্ছে। নির্ধারিত ২০ লাইনে ৫০০টি কবর রাখা হয়েছে, যা ১৮ মাস পর আবার নতুনভাবে ব্যবহার করা যায়।
অন্যদিকে উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন-উল-হাসান জানান, রায়েরবাজার কবরস্থানে শুধু উত্তর সিটির আওতাধীন লাশই দাফন হবে। দক্ষিণ সিটির কোনো লাশ সেখানে নেওয়া সম্ভব নয়।
আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের দাফন সেবা কর্মকর্তা কামরুল আহমেদ বলেন, “জুরাইন কবরস্থানে মাসে এক-তৃতীয়াংশ লাশ দাফনের পর আর কোনো জায়গা থাকে না। ফলে দক্ষিণের আওতাধীন হাসপাতালের মর্গে লাশ জমে যায়। এর একটি স্থায়ী সমাধান জরুরি।
মর্গের অবস্থাও সংকটজনক। ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গের ইনচার্জ রামো চন্দ্র দাস জানান, ফ্রিজে রাখা ২২টি লাশ সেপ্টেম্বর থেকে ধাপে ধাপে নেওয়া হবে। তবে মিটফোর্ড হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী শ্যামল চন্দ্র দাস জানান, সেখানে ছয়টি লাশ পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে কারণ ২০১৪ সাল থেকে ফ্রিজ নষ্ট।
আইন অনুযায়ী বেওয়ারিশ লাশ দাফন বা দাহ সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব হলেও জায়গা সংকট ও করপোরেশনের সীমাবদ্ধতায় রাজধানীতে লাশ ব্যবস্থাপনা এখন বড় সংকটে পরিণত হয়েছে।