ভারতের সীমান্ত অঞ্চলে প্রবল বর্ষণের কারণে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে তিনটি আন্তঃসীমান্ত নদী—চেনাব, রাভি ও সুতলেজ নদীতে পানির প্রবাহ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে সৃষ্ট তীব্র চাপ সামলাতে বুধবার (২৭ আগস্ট) পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ চেনাব নদীর কাদিরাবাদ বাঁধের তীররক্ষা অংশে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দেয়।
ফ্রান্স২৪-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাঁধ রক্ষায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হলেও এর ফলে বন্যার পানিতে ডুবে গেছে বিশ্বের অন্যতম শিখ ধর্মীয় স্থাপনা কর্তারপুর মন্দির। ১৫৩৯ সালে শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গুরু নানক এখানে মৃত্যুবরণ করেন। বর্তমানে পাঞ্জাব প্রদেশের নারোওয়াল এলাকায় অবস্থিত এ মন্দিরে আটকে পড়া প্রায় ১০০ জনকে উদ্ধারে নৌকা মোতায়েন করা হয়েছে।
পাঞ্জাব প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র মাজহার হোসেন বলেন,
“বাঁধের মূল কাঠামো রক্ষায় আমরা ডান পাশের তীররক্ষা বাঁধ ধ্বংস করতে বাধ্য হয়েছি, যাতে পানির চাপ কিছুটা হ্রাস পায়।”
দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক মানুষ বসবাস করেন পাঞ্জাবে। নদীগুলোর তীরবর্তী এলাকা থেকে লাখ লাখ মানুষ ও গবাদিপশু সরিয়ে নিতে সেনাবাহিনী কাজ করছে। ইতোমধ্যে প্রায় দুই লাখ ১০ হাজার মানুষ নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ কর্তৃপক্ষ।
এদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারত বাঁধের জলকপাট খোলার আগে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে অগ্রিম নোটিশ দিয়েছিল। তবে ভারতীয় কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
পাঞ্জাবের প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রধান ইরফান আলি বলেছেন,
“১৯৮৮ সালের পর এবার রাভি নদীতে সবচেয়ে বেশি পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আমি জনগণকে অবিলম্বে নদীতীর ত্যাগ করে নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি আরও সতর্ক করেন, বন্যার ঢল বুধবার রাত ও বৃহস্পতিবার সকালে লাহোর হয়ে প্রবাহিত হতে পারে। চলতি বর্ষায় ইতোমধ্যে পাকিস্তানে ভূমিধস ও বন্যায় ৮০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।