চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে সংঘর্ষে গুরুতর আহত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ চার দিন ধরে লাইফ সাপোর্টে আছেন। বর্তমানে তাঁর চেতনার মান (কনশাস লেভেল) ৬–এর আশপাশে, যেখানে স্বাভাবিক মান ১৫। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এটি ১০–এর ওপরে না ওঠা পর্যন্ত তাঁকে আশঙ্কামুক্ত ঘোষণা করা যাবে না। আজ বুধবার দুপুর ২টায় তাঁর চিকিৎসা নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হবে।
গত রোববার সংঘর্ষ চলাকালে ইমতিয়াজের মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত লাগে। গুরুতর অবস্থায় তাঁকে নগরের পার্কভিউ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেদিন রাতেই তাঁর মাথায় অস্ত্রোপচার হয় এবং পরই তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত আইসিইউতে তাঁর অবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি।
ইমতিয়াজের বাড়ি কুমিল্লায় হলেও পরিবার থাকে বগুড়ায়। ছেলে আহত হওয়ার খবর পেয়ে তাঁর বাবা আমির হোসেন ও মা শাহনাজ আমিন সোমবার সকালে চট্টগ্রামে আসেন। তাঁরা এখন হাসপাতালে ছেলের চিকিৎসার খবর নিচ্ছেন। ইমতিয়াজের ভাই আসাদুজ্জামান সজীব জানান, "চিকিৎসকদের পরামর্শে আমরা আইসিইউর ভেতরে যাইনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুপুরে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হবে।"
একই সংঘর্ষে আহত সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মামুন মিয়াকেও পার্কভিউ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছিল। তবে তাঁর অবস্থার উন্নতি হওয়ায় সোমবার বিকেলে লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি আইসিইউতে পর্যবেক্ষণে আছেন এবং শিগগিরই তাঁকে কেবিনে স্থানান্তর করা হতে পারে।
পার্কভিউ হাসপাতালের উপমহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর জানান, "ইমতিয়াজের বিষয়ে দুপুরে মেডিকেল বোর্ড বসবে। মামুনের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো।"
উল্লেখ্য, গত শনিবার দিবাগত রাত থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় স্থানীয় গ্রামবাসী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগ থেকে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত। এতে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফসহ অন্তত ২০০ শিক্ষার্থী আহত হন। স্থানীয়দের দাবি, ঘটনায় ১০ থেকে ১২ জন গ্রামবাসীও আহত হয়েছেন।