ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত রেখে চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ বহাল রাখলো আপিল বিভাগ। এই স্থগিতাদেশ আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ বুধবার এই আদেশ দেন। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে করা আবেদন শুনানি শেষে জারি করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির জানান, আপিল বিভাগের আদেশের ফলে ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে আর কোনো আইনি বাধা নেই।
গত সোমবার হাইকোর্ট একটি রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ডাকসুর নির্বাচনপ্রক্রিয়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকার কার্যক্রম ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেছিলেন। এর ফলে ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ডাকসু নির্বাচন আটকা পড়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ওই আদেশ স্থগিতের জন্য আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করে। চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে নির্বাচন চালানোর পথ খুলে দেয়।
মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিভিল মিসলেনিয়াস পিটিশন আদালতে দাখিল করেন। চেম্বার আদালত এই আবেদন আজ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করে।
আদালতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ও মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রার্থী এস এম ফরহাদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইমরান এ সিদ্দিক।
তফসিল অনুযায়ী, ডাকসু নির্বাচনে ভোট গ্রহণ ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ থেকে জিএস পদে প্রার্থী হয়েছেন এস এম ফরহাদ, যিনি ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি।
ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা নিয়ে ‘অপরাজেয় ৭১’ ও ‘অদম্য ২৪’ প্যানেলের বি এম ফাহমিদা আলম ২৮ আগস্ট হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছিলেন। রিটে অভিযোগ করা হয়, ফরহাদ নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
হাইকোর্ট রুলসহ আদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে ১৫ দিনের মধ্যে অভিযোগ গ্রহণ ও অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয়। ট্রাইব্যুনাল রিট আবেদনকারী, ফরহাদসহ অন্য প্রার্থীদের বক্তব্য শুনে ২১ অক্টোবর আদালতে প্রতিবেদন দেবে।
এবার ডাকসুর ২৮টি পদের জন্য মোট ৪৭১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে নারী প্রার্থী ৬২ জন। সদস্যপদে সবচেয়ে বেশি ২১৭ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছে। বিভিন্ন ছাত্রদল ও সংগঠন মিলিয়ে মোট প্যানেল ১০টি।