খাগড়াছড়ির গুইমারায় গুলিতে তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ তথ্য প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) আহসান হাবিব পলাশ। তিনি জানান, গুলিতে তিনজন নিহত ও আরও তিনজন আহত হয়েছেন। নিহতদের লাশ খাগড়াছড়ি জেলা হাসপাতালে রাখা হয়েছে, আগামীকাল সোমবার ময়নাতদন্ত হবে।
জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ সাবের বলেন, হাসপাতালে গুইমারা থেকে আনা আহত চারজন চিকিৎসাধীন।
এর আগে পাহাড়ি এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে শনিবার ভোর থেকে ‘জুম্ম-ছাত্র জনতা’র ব্যানারে অবরোধ কর্মসূচি চলছে। কর্মসূচির কারণে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি, খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি-সাজেক সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। রোববার সকালে অবরোধকারীরা বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে বিক্ষোভ করেন।
গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে এক কিশোরী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। অচেতন অবস্থায় রাত ১১টার দিকে তাঁকে উদ্ধার করেন স্বজনেরা। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করে ছয় দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
আজ দুপুরে অবরোধ চলাকালে গুইমারার রামেসু বাজারে অগ্নিসংযোগ হয়। এতে বাজারের বেশ কয়েকটি দোকান ও পাশের বসতঘর পুড়ে যায়। আগুনে মোটরসাইকেলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাজারটি চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরে অবস্থিত। ভিডিও ও ছবি ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তাঁদের ওপর গুলি চালানো হয়। গুলির পর ভয়ে লোকজন ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে ২০-২৫ জন মুখোশধারীসহ কয়েকজন বাজার ও বাড়িঘরে লুটপাট করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়।
গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী বলেন, অবরোধ নিয়ে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে উত্তেজনা চলছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গেও ঝামেলা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি উত্তপ্ত।
অন্যদিকে খাগড়াছড়ি শহরেও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সকাল থেকে শহরের মোড়ে মোড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অবস্থান দেখা গেছে। বাজার-দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। প্রয়োজনীয় কাজে বাইরে বের হওয়া লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে নিরাপত্তা বাহিনী।