ঢাকা | , ১২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফিলাডেলফিয়ার মিউটার জাদুঘর নতুন নীতি: মানবদেহ প্রদর্শন হবে প্রসঙ্গভিত্তিক

Jashore Now
নিউজ প্রকাশের তারিখ : Aug 28, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন: ফিলাডেলফিয়ার মিউটার জাদুঘরের প্রদর্শনী, যেখানে মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এবং চিকিৎসার পুরনো সরঞ্জাম দেখা যায়। ছবির ক্যাপশন: ফিলাডেলফিয়ার মিউটার জাদুঘরের প্রদর্শনী, যেখানে মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এবং চিকিৎসার পুরনো সরঞ্জাম দেখা যায়।
ad728

ফিলাডেলফিয়ার মিউটার জাদুঘর নতুন নীতিতে মানবদেহ প্রদর্শন করবে

যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায় লাল ইটের দোতলা মিউটার জাদুঘরে মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, খুলি, মোমের ছাঁচ এবং চিকিৎসার পুরনো সরঞ্জাম প্রদর্শিত হয়। এটি চিকিৎসাবিজ্ঞানের একটি অনন্য সংগ্রহশালা হিসেবে পরিচিত।

জাদুঘরে দীর্ঘদিন ধরে একজন অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তির বিশাল অন্ত্র প্রদর্শিত হচ্ছিল। সম্প্রতি তাঁর পরিচয় জানা গেছে। তিনি ছিলেন জোসেফ উইলিয়ামস। শুধুমাত্র অন্ত্রই নয়, তাঁর জীবনকথা ও গল্পও এখন জাদুঘরে প্রদর্শিত হচ্ছে।

মানবদেহের অংশ প্রদর্শনের নৈতিকতা নিয়ে দুই বছর ধরে বিতর্ক চলার পর জাদুঘর নতুন নীতি ঘোষণা করেছে। এখন থেকে সব প্রদর্শনী ‘প্রসঙ্গভিত্তিক’ হবে এবং দাতার পরিচয় জানানো হবে। জাদুঘরের জ্যেষ্ঠ পরিচালক সারা রে বলেন, “এতে আমরা মানুষের প্রতি ন্যায়বিচার করতে পারব এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাস ও বৈচিত্র্য তুলে ধরতে পারব।”

জাদুঘরের সংগ্রহে বর্তমানে ১৩৯টি মানুষের খুলি রয়েছে। এগুলো কীভাবে প্রদর্শন করা হবে, তা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে।

১৮৬৩ সালে স্থানীয় শল্যচিকিৎসক টমাস মিউটারের ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে প্রতিষ্ঠিত এই জাদুঘরে এখন প্রায় ৩৫ হাজার জিনিসপত্র রয়েছে। এর মধ্যে ছয় হাজার জৈব নমুনা। দর্শনার্থীরা খুলি, মোমের ছাঁচ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও বিশাল চিকিৎসা গ্রন্থাগার ঘুরে দেখতে পারেন।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, জাদুঘর এখন থেকে শুধুমাত্র জীবিত দাতা বা তাঁদের বংশধরের কাছ থেকে সামগ্রী গ্রহণ করবে। এতে দাতার পরিচয় নিশ্চিত করা যাবে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২০ সালে হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করা একজন রোগী তাঁর পুরনো বড় হৃৎপিণ্ড জাদুঘরে দান করেছিলেন। এটি এখন কাচের পাত্রে রাখা হয়েছে।

২০২৩ সালে নতুন নেতৃত্ব আসার পর জাদুঘর পোস্টমর্টেম প্রকল্প শুরু করে। এটি দুই বছরের জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি, যা সংগ্রহশালার উপাদান পুনর্মূল্যায়ন ও মানবদেহ প্রদর্শনের নৈতিকতা নিয়ে আলোচনা করে। তবে ইউটিউব চ্যানেল থেকে ভিডিও মুছে ফেলা এবং ডিজিটাল প্রদর্শনী ও বার্ষিক হ্যালোইন অনুষ্ঠান বাতিল হওয়ায় দর্শক ও সমর্থকের ক্ষোভ বেড়ে যায়।

প্রকল্পের উদ্যোক্তা ও সাবেক পরিচালক কেট কুইন বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ছিল মানুষকে আলোচনায় আনা, জাদুঘর নাটকীয়ভাবে বদলানো নয়।” তবে প্রাক্তন পরিচালকরা এই পরিবর্তনের সমালোচনা করেন এবং ‘প্রটেক্ট দ্য মিউটার’ নামে একটি গোষ্ঠী গড়ে ওঠে। অনলাইন আবেদনে ৩৫ হাজারের বেশি স্বাক্ষর জমা পড়ে।

জাদুঘরের দোতলা ভবনের বারান্দায় দর্শকরা সিয়ামিজ যমজ, আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের টুকরা এবং অস্বাভাবিক বড় অন্ত্রসহ অন্যান্য মানবদেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দেখতে পারেন। এছাড়াও উইলিয়ামসের জীবনকথা ও অন্যান্য ব্যতিক্রমী সামগ্রী প্রদর্শিত হয়।

নতুন প্রশাসন ইউটিউব চ্যানেলের ৮০ শতাংশ ভিডিও পুনরুদ্ধার করেছে। প্রটেক্ট দ্য মিউটারের সদস্যরা এটি স্বাগত জানিয়েছেন। তবে পরিচয়হীন ২.২৯ মিটার লম্বা কঙ্কাল এখনো শনাক্ত করা যায়নি।

একজন সংগঠক বলেন, “অ্যাক্রোমেগালি রোগের এ নমুনা শ্রদ্ধার সঙ্গে প্রদর্শন করা হোক, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বুঝতে পারে, এটি এখনও মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলে।


নিউজটি পোস্ট করেছেন : Jashore Now

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ