ঢাকা | , ১২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজউকের সফটওয়্যার বিপর্যয়ে থমকে আবাসন খাত, আটকে হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

Jashore Now
নিউজ প্রকাশের তারিখ : Aug 28, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন: রাজউকের অনলাইন নকশা অনুমোদন কার্যক্রম স্থগিত থাকায় আটকে আছে হাজারো আবাসন প্রকল্প ছবির ক্যাপশন: রাজউকের অনলাইন নকশা অনুমোদন কার্যক্রম স্থগিত থাকায় আটকে আছে হাজারো আবাসন প্রকল্প
ad728

রাজউকের অনলাইন নকশা অনুমোদন ও জমি ব্যবহার ছাড়পত্র প্রদানের কার্যক্রম প্রায় তিন মাস ধরে স্থবির হয়ে আছে। এর ফলে ঢাকার আবাসন খাতে হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ আটকে গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এতে শুধু বেসরকারি খাত নয়, সরকারও বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ইলেকট্রনিক কনস্ট্রাকশন পারমিটিং সিস্টেম (ইসিপিএস) সফটওয়্যারের মাধ্যমে এসব আবেদন গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করে। কিন্তু গত ১৯ মে এ সিস্টেমে নিরাপত্তা ত্রুটি ধরা পড়লে পুরো কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। প্রতি বছর প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে রক্ষণাবেক্ষণ হওয়া এ সফটওয়্যার পরিচালনায় রাজউকের নিজস্ব জনবল বা প্রযুক্তিগত সক্ষমতা নেই।

বর্তমানে প্রায় সাড়ে চার হাজার নকশা অনুমোদন এবং পাঁচ শতাধিক জমি ছাড়পত্রের আবেদন ঝুলে আছে। রাজউকের চেয়ারম্যান মো. রিয়াজুল ইসলাম জানান, ২০ আগস্ট থেকে নিরাপত্তা জোরদার করে আংশিকভাবে কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। তবে কর্মকর্তাদের মতে, ডেটাবেজ ও সার্ভার নিরাপত্তা রক্ষায় দক্ষ জনবল না থাকায় ভবিষ্যতেও ঝুঁকি রয়ে গেছে।

একটি শীর্ষস্থানীয় আবাসন প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী জানান, নকশা অনুমোদন বন্ধ থাকায় তাঁদের আটটি প্রকল্প—যার আর্থিক মূল্য ৬০০ কোটি টাকার বেশি—আটকে গেছে। আরেকজন ডেভেলপার বলেন, প্রতিটি প্রকল্পে গড়ে ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ থাকায় সারাদেশে আটকে থাকা হাজারো আবেদন মানেই বিপুল আর্থিক ক্ষতি।

এর মধ্যেই গত ১৯ মে মিরপুরের বাউনিয়া বাঁধ এলাকায় জলাভূমি ও উচ্চতা-সীমিত অঞ্চলে মাত্র ১৭ মিনিটে একটি ১৫ তলা ভবনের নকশা অনুমোদন নিয়ে বড় ধরনের জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশ পায়। রাজউক প্রথমে সার্ভার হ্যাকড হওয়ার দাবি করলেও পরে জানা যায়, কর্মকর্তার আইডি–পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেই অনুমোদন করানো হয়। এ ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

রাজউকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ থেকে ২০২৫ সালের মে পর্যন্ত ৫৬ হাজার ৭২৯টি আবেদন জমা পড়ে, যার মধ্যে ৪২ হাজার ৭টি ভবনের অনুমোদন দেওয়া হয়। বর্তমানে প্রতি মাসে গড়ে এক হাজার আবেদন আসে।

সফটওয়্যার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান ‘দোহাটেক’-এর সঙ্গে রাজউকের চুক্তি ২০২৪ সালের জুনে শেষ হলেও আর কোনো নতুন প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। এখন আবার নতুন করে দরপত্র আহ্বানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত বড় ব্যয়ে তৈরি ইসিপিএস একদিনের জন্যও অবহেলায় রাখা উচিত হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন বলেন, “নাগরিক সেবা ও সরকারের রাজস্ব আদায়ের সঙ্গে জড়িত এমন সংবেদনশীল সফটওয়্যার রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলা অগ্রহণযোগ্য। এর সঙ্গে জড়িত সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।


নিউজটি পোস্ট করেছেন : Jashore Now

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ