ঢাকা | , ১২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মণিপুরে মোদির সম্ভাব্য সফর, পুলিশ সদস্যদের ছুটি বাতিল

Jashore Now
নিউজ প্রকাশের তারিখ : Sep 3, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন: মণিপুরে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে এখনো বাস্তুচ্যুত মানুষ ত্রাণশিবিরে বসবাস করছেন। ছবির ক্যাপশন: মণিপুরে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে এখনো বাস্তুচ্যুত মানুষ ত্রাণশিবিরে বসবাস করছেন।
ad728

ভারতের মণিপুর রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সম্ভাব্য সফরকে কেন্দ্র করে প্রশাসনিক তৎপরতা বেড়েছে। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তর থেকে গত ৩০ আগস্ট নির্দেশনা জারি করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে ৭ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোনো পুলিশ কর্মকর্তা বা সদস্য ছুটি নিতে পারবেন না। এ সময় তাদের জরুরি দায়িত্বে ডাকা হতে পারে।

মণিপুরের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা দ্য ওয়্যারকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর সম্ভাব্য সফরের কারণেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সফরের সম্ভাব্য সূচিতে রাজধানী ইম্ফল এবং সহিংসতায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা চূড়াচাঁদপুরের নাম রয়েছে।

দ্য হিন্দুর ৩১ আগস্টের প্রতিবেদনে সরকারি সূত্রের বরাতে বলা হয়, সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে মোদির মণিপুর সফরের সম্ভাবনা রয়েছে। যদি এই সফর হয়, তবে ২০২৩ সালের মে মাসে শুরু হওয়া জাতিগত সহিংসতার পর এটি হবে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম মণিপুর সফর।

রাজ্যের বিভিন্ন সূত্রের মতে, এই সফর মণিপুরের দীর্ঘ সহিংসতার অবসান এবং পূর্ণাঙ্গ সরকার গঠনের পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে বাস্তবে এখনো গভীর বিভেদ বিদ্যমান। প্রায় ৮৫০ দিন ধরে চলা সংঘাতে ২৬০ জনের বেশি নিহত এবং ৬০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। হাজারো মানুষ এখনো ত্রাণশিবিরে অবস্থান করছেন।

মোদির সম্ভাব্য সফরের সঙ্গে দুটি বিষয় জড়িত। একটি হলো কুকি-জো গোষ্ঠীর সঙ্গে সাসপেনশন অব অপারেশনস (এসওও) কাঠামোর অধীনে নতুন চুক্তি। অন্যটি হলো নতুন মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগ এবং সরকার গঠন।

কুকি সম্প্রদায়ের দুই প্রধান দল—ইউনাইটেড পিপলস ফ্রন্ট (ইউপিএফ) ও কুকি ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (কেএনও)—দ্য ওয়্যারকে নিশ্চিত করেছে যে তারা ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আমন্ত্রণপত্র পেয়েছে। সেখানে ৩ সেপ্টেম্বর নতুন এসওও চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ২০০৮ সালে স্বাক্ষরিত এ চুক্তি অনুযায়ী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে নির্দিষ্ট ক্যাম্পে অবস্থান ও অস্ত্রশস্ত্র তালাবদ্ধ রাখতে হয়।

তবে ২০২৩ সালের মে মাসে ভয়াবহ জাতিগত সহিংসতার কারণে নতুন চুক্তি থেমে যায়। এরপর থেকে ইউপিএফ ও কেএনও কুকি-জো অঞ্চলের জন্য ‘স্বতন্ত্র প্রশাসন’-এর দাবি জানিয়ে আসছে। এই দাবি কুকি-জো জনগোষ্ঠীর মধ্যে সমর্থন পেলেও মেইতেই সম্প্রদায় দৃঢ়ভাবে এর বিরোধিতা করছে।

২০২৪ সালে নয়াদিল্লিতে তিন দফা রাজনৈতিক সংলাপ হয়েছে মণিপুরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবিকে ঘিরে। মধ্যস্থতাকারী এ কে মিশ্র গত আগস্টে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে একটি খসড়া প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। তবে ভারত সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।

রাজ্য বিজেপি ও কংগ্রেস উভয় দলই বলছে, কুকি গোষ্ঠীর স্বতন্ত্র প্রশাসনের দাবি মেনে নিলে মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে কেন্দ্রের প্রতি তীব্র অসন্তোষ তৈরি হবে।

মণিপুর বিধানসভায় মোট ৬০ আসনের মধ্যে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ দাবি করছে, তাদের হাতে রয়েছে ৪৪ আসন। তবে সহিংস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কারণে বাড়তি সমালোচনার মুখে ২০২৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়। এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ পদত্যাগ করেন।

এখন মোদির সম্ভাব্য সফরকে ঘিরে নতুন সরকার গঠনের জোর আলোচনা শুরু হয়েছে।


নিউজটি পোস্ট করেছেন : Jashore Now

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ