রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের পুনর্নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী আজ রোববার (২৪ আগস্ট) সকাল থেকে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হওয়ার কথা। তবে শিক্ষক ও কর্মকর্তা–কর্মচারীদের পূর্বঘোষিত কর্মবিরতির কারণে এ কার্যক্রম নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
রাকসু, হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর। তবে নির্বাচন কমিশন তারিখ অপরিবর্তিত রেখে ইতোমধ্যে দুবার তফসিল পুনর্বিন্যাস করেছে। সর্বশেষ গত বুধবার মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন। পরে কমিশন পুনরায় সময়সূচি ঘোষণা করে।
নতুন তফসিল অনুযায়ী, ২৪ থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণ চলবে। রাকসু ও সিনেটের মনোনয়নপত্র রাকসুর কোষাধ্যক্ষের দপ্তর থেকে এবং হল সংসদের মনোনয়নপত্র সংশ্লিষ্ট হলের প্রশাসনিক কার্যালয় থেকে বিতরণের কথা রয়েছে। তবে কর্মবিরতির কারণে এসব দপ্তর থেকে কার্যক্রম শুরু হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
বিজয়-২৪ হলের প্রাধ্যক্ষ মো. জামিরুল ইসলাম বলেন, “মনোনয়নপত্র বিতরণের প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। তবে কর্মকর্তা–কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালন করলে কার্যক্রম শুরু নাও হতে পারে।”
অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এনামুল হক জানান, “মনোনয়নপত্র বিতরণ নির্ভর করছে রাকসুর কোষাধ্যক্ষ, হল প্রাধ্যক্ষ ও কর্মকর্তা–কর্মচারীদের ওপর। কর্মবিরতি চললে বিতরণ সম্ভব হবে না।”
পোষ্য কোটা ইস্যুকে সামনে রেখে কর্মবিরতি শুরু হলেও এর পেছনে নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তবে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আমীরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের দাবি মানলেই আন্দোলন প্রত্যাহার করা হবে। রাকসু নির্বাচনের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই।”
এদিকে নির্বাচন কমিশনের প্রধান পরিবর্তনও প্রক্রিয়াকে কিছুটা জটিল করেছে। ২০ আগস্ট প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক আমজাদ হোসেনকে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় তিনি দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম।
নির্বাচনী পরিবেশ তৈরিতে প্রশাসনের ব্যর্থতার অভিযোগও তুলেছে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন। তাঁদের দাবি, চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় ছবি না থাকা, ভোটকেন্দ্র একাডেমিক ভবনে না রাখা এবং নারী প্রার্থীদের সাইবার বুলিং ঠেকাতে মনিটরিং সেল গঠন না করার কারণে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। ছাত্রদল, ছাত্র অধিকার পরিষদ ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টসহ বিভিন্ন সংগঠন মনে করে, প্রশাসনের ব্যর্থতায় সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ঝুঁকির মুখে।
তবে সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তিনি বলেন, “নির্বাচনের পরিবেশ একটি আপেক্ষিক বিষয়। কর্মবিরতির কারণে মনোনয়নপত্র বিতরণে কোনো প্রভাব পড়বে না। নির্বাচনী কার্যক্রম এগিয়ে গেলে সংকটগুলোও কাটিয়ে উঠবে।