ঢাকা | , ১২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নলদীতে এনজিওর বিরুদ্ধে ঋণ ও সঞ্চয় জালিয়াতির অভিযোগ: ভুক্তভোগী পরিবারদের উদ্বেগ

Jashore Now
নিউজ প্রকাশের তারিখ : Sep 2, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন: নলদীর আদ্‌-দ্বীন ওয়েলফেয়ার সেন্টার, যেখানে ঋণ ও সঞ্চয় সংক্রান্ত সমস্যা হয়েছে। ছবির ক্যাপশন: নলদীর আদ্‌-দ্বীন ওয়েলফেয়ার সেন্টার, যেখানে ঋণ ও সঞ্চয় সংক্রান্ত সমস্যা হয়েছে।
ad728

গৃহবধূ জনতা বেগম (৩০) অভাবের সংসারে আছেন। কয়েক মাস আগে তিনি আদ্‌-দ্বীন ওয়েলফেয়ার সেন্টার থেকে ঋণ নিয়েছিলেন এবং তা শোধ করেছেন। ঘর মেরামতের জন্য তিনি নতুন ঋণ নিতে চাইলেও তা পাননি। ঋণ পাওয়ার আশায় তিনি পাঁচ হাজার টাকা সঞ্চয় হিসেবে এনজিওর মাঠকর্মী দিতি খানমের কাছে জমা দেন। কিন্তু পরে জানতে পারেন, তাঁর নামে ওই এনজিওতে ৭০ হাজার টাকার ঋণ দেখানো হয়েছে। এই খবর শুনে তিনি ও তাঁর পরিবার দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

জনতা বেগম বলেন, “আমি ঋণ নিয়েছি, শোধ করেছি। পরে দিতির কাছে আবার ৫০ হাজার টাকার ঋণের জন্য গিয়েছিলাম। পাঁচ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা দিয়েছি। দিতি বারবার বলেছিলেন ঋণ হবে, কিন্তু হয়নি। অথচ অফিস থেকে বলা হলো, আমরা নাকি ৭০ হাজার টাকার ঋণ দিয়েছি।”

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার নলদীতে অবস্থিত আদ্‌-দ্বীন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সঙ্গে এমন ঘটনা অনেক সদস্যের ক্ষেত্রেই ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রোববার নলদী, নওয়াপাড়া ও আশপাশের বাসিন্দা অন্তত ১০টি পরিবারের সঙ্গে প্রথম আলোর কথা হয়। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, কিস্তির টাকা লিপিবদ্ধ হয়নি, শোধ করা ঋণের ওপর নতুন ঋণ দেখানো হয়েছে এবং সঞ্চয়ের টাকা ঠিকমতো জমা হয়নি।

নওয়াপাড়া গ্রামের রুবিয়া খানম বলেন, “আমার ঋণের কিস্তি নিয়মিত দিই। কিন্তু একটা কিস্তি বইতে জমা হয়নি। আমার বইতে অন্য কারো ছবি ব্যবহার করে একটি মৌসুমি ঋণ উঠানো হয়েছে, যা আমি জানতাম না। আমি গরিব, নিজের টাকাই চলতে চায়।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভুক্তভোগী বলেন, “আমার ও মেয়ের নামে দুটি ঋণ ছিল। আমরা তা শোধ করেছি। এখন শুনছি ওই দুই বই থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা উত্তোলন হয়েছে, কিন্তু আমরা কিছু জানি না।”

নলদী শাখার মাঠকর্মী দিতিকে প্রতিষ্ঠান আইনি নোটিশ দিয়েছে। নোটিশে বলা হয়েছে, তিনি ১৫০-এর বেশি গ্রাহকের কিস্তি ও সঞ্চয়ের টাকা জমা না দিয়ে ৩৬ লাখ ৩৩ হাজার ৫০৪ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাঁকে টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক হারুন অর রশীদ বলেন, “দিতি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থা নিচ্ছে। যেভাবে গ্রাহকেরা অফিস থেকে টাকা দিয়েছেন, সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। ক্ষতিগ্রস্তদের বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নেব।”

তবে দিতি খানম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “শাখা ব্যবস্থাপক, আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক ও হিসাবরক্ষক গ্রাহকদের অজান্তে ঋণ তুলেছেন। আমি কেবল ঋণের প্রস্তাব দিই। অনুমোদন ও বিতরণ ছিল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দায়িত্ব। সব দায় এখন আমার ওপর চাপানো হচ্ছে।


নিউজটি পোস্ট করেছেন : Jashore Now

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ